ঈদগাঁও থানা পুলিশের সঙ্গে যুবদলের প্রীতি ম্যাচে তোলপাড়
দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতার সময় যখন প্রশাসনের নিরপেক্ষতা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠছে, ঠিক তখনই ঈদগাঁও উপজেলা যুবদল ও ঈদগাঁও থানা পুলিশের মধ্যে অনুষ্ঠিত এক ফুটবল প্রীতি ম্যাচকে ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শুরু হয়েছে তীব্র আলোচনা ও সমালোচনা।
স্থানীয় সূত্র জানায়, সম্প্রতি ঈদগাঁও পাবলিক মাঠে অনুষ্ঠিত ওই প্রীতি ম্যাচে একপক্ষে ছিলেন ঈদগাঁও উপজেলা যুবদলের কর্মীরা, অপরপক্ষে থানা পুলিশের সদস্যরা। খেলা ঘিরে মাঠে উপস্থিত ছিলো বিপুলসংখ্যক স্থানীয় দর্শক। ম্যাচ শেষে দুই পক্ষের বেশ কিছু ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সমালোচনার ঝড় ওঠে।
অনেক নাগরিক প্রশ্ন তুলেছেন, যখন দেশের রাজনৈতিক মাঠে উত্তাপ, তখন পুলিশের এমন দলীয় ঘনিষ্ঠতা কি নিরপেক্ষতার পরিপন্থী নয়? একাধিক রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলছেন, রাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের উচিত সকল দলের প্রতি সমদূরত্ব বজায় রাখা, কিন্তু এমন কর্মকাণ্ডে সেই আস্থা নড়বড়ে হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঈদগাঁও থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বলেন, থানার পুলিশ সদস্যরা প্রায় প্রতিদিন শরীরচর্চা করে। তবে গতকাল তারা বৃষ্টির কারণে খেলতেই পারেনি বলে দাবি করেন তিনি।
তবে স্থানীয় যুবদল কর্মী জাহাঙ্গীর আলম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লাইভ সম্প্রচারে পুরো ম্যাচটি দেখান। সেখানে তাকে বেশ উচ্ছ্বসিতভাবে খেলা উপভোগ করতে দেখা যায়। এছাড়া ঈদগাঁও উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক কামাল হোসেন তার ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে বেশ কিছু ছবি প্রকাশ করে লিখেছেন, “সুন্দর এক মুহূর্ত – ফুটবল ম্যাচ। ঈদগাঁও থানা ও ঈদগাঁও উপজেলা যুবদল।”
তবে এই আয়োজন নিয়ে স্থানীয়ভাবে দ্বিমত রয়েছে। কেউ একে খেলাধুলার মাধ্যমে সৌহার্দ্য তৈরির প্রচেষ্টা হিসেবে দেখছেন। আবার অনেকে বলছেন, রাজনৈতিক দল ও প্রশাসনের এমন ‘বন্ধুত্বপূর্ণ প্রদর্শন’ জনগণের আস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।
বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ম্যাচের ভিডিও ও ছবিগুলো ভাইরাল হয়ে নানা মন্তব্যে মুখর নেটিজেনরা। কেউ বলছেন, “এ যেন প্রীতি ম্যাচ নয়, নীতির লঙ্ঘন।” আবার কেউ দেখছেন এটি “রাজনৈতিক উত্তেজনার মধ্যে একটুখানি সৌহার্দ্যের বার্তা” হিসেবে।

আপনার মতামত লিখুন